যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের প্রথম রুয়ান্ডা ফ্লাইট বাতিল।

যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের একাংশকে রুয়ান্ডায় পাঠানোর পরিকল্পনা কার্যকরে শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছে ব্রিটিশ সরকার।
আদালতের আদেশের কারণে আশ্রয়প্রার্থীদের নিয়ে পূর্ব আফ্রিকার দেশটির উদ্দেশ্যে উড়াল দিতে যাওয়া প্রথম ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে তাদের।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে দক্ষিণপশ্চিম ইংল্যান্ডের একটি বিমানঘাঁটি থেকে ওই ফ্লাইটে ৭ আশ্রয়প্রার্থীর রুয়ান্ডায় যাওয়ার কথা ছিল; কিন্তু সন্ধ্যার দিকে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের এক আদেশ তাতে বাধ সাধে।
বিমানটি ওড়ার নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত (ইসিএইচআর) এক ইরাকি শরণার্থীকে যুক্তরাজ্য থেকে রুয়ান্ডা পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা আবেদন মঞ্জুর করে। এরপর অন্য যাত্রীরাও তাদের রুয়ান্ডা যাত্রা ঠেকাতে আদালতের দ্বারস্থ হলে ফ্লাইটটি বাতিল হয়ে যায়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়লেও যুক্তরাজ্য এখনও স্ট্রাসবুর্গের ওই ইউরোপীয় আদালতের সদস্য। ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডা ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ‘হতাশা’ ব্যক্ত করলেও বলেছেন, “পরবর্তী ফ্লাইটের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।” ইউরোপ থেকে ছোট নৌকায় বিপজ্জনকভাবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করা ঠেকাতে এপ্রিলে আশ্রয়প্রার্থীদের একাংশকে রুয়ান্ডায় পাঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানায় যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল সরকার।
তাদের এ পরিকল্পনায় উদারপন্থি ও বাম-ঘরানার বিরোধীরা স্তম্ভিত হয়ে যান। দাতা সংস্থা ও ধর্মীয় নেতারাও টোরিদের এ পরিকল্পনাকে ‘অমানবিক’ বলে অ্যাখ্যা দিয়ে আসছেন। বার্তা সংস্থা জানায়, রুয়ান্ডাগামী প্রথম ফ্লাইটে যে আশ্রয়প্রার্থীদের নাম ছিল, তাদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন স্বাস্থ্য ও মানবাধিকার পরিস্থিতি বিবেচনায় কেন তাদেরকে রুয়ান্ডায় পাঠানো উচিত হবে না, যুক্তিসঙ্গতভাবে তা বোঝাতে সক্ষম হন। এর ফলে মঙ্গলবারের ফ্লাইটের যাত্রী সংখ্যা হাতেগোণা কয়েকজনে নেমে আসে। ফ্লাইটটি ওড়ার কিছুক্ষণ আগে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত (ইসিএইচআর) হস্তক্ষেপ করে বসে। তাদের কাছে এক ইরাকি তাকে যুক্তরাজ্য থেকে রুয়ান্ডা পাঠানোর সিদ্ধান্তে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেছিল। মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য সময় সাড়ে ৭টার কিছু সময় পর তারা সেই আবেদন মঞ্জুর করে।
তাদের আদেশে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের আদালতে এ বিষয়ে পর্যালোচনা শেষ হওয়ার আগে আবেদনকারীকে রুয়ান্ডায় পাঠানো যাবে না।
ইসিএইচআরের ওই আদেশের পথ ধরে বাকি ৬ জনও লন্ডনের আদালতে তাদেরকে রুয়ান্ডায় পাঠানোর সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে বসেন। স্থানীয় সময় রাত সোয়া ১০টার মধ্যে সব যাত্রীকে বিমানটি থেকে নামিয়ে আনা হয়। পরে আনুমানিক ৫ লাখ পাউন্ডে ভাড়া করা বোয়িং ৭৬৭ স্পেনে ফিরে যায়।