স্বাগতম ২০২১ !

আজ পহেলা জানুয়ারি ২০২১ শুক্রবার, খ্রিস্টীয় নববর্ষ। বছর ঘুরে আবারো এসেছে ইংরেজি নববর্ষ। মহামারি করোনার মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার পশ্চিমাকাশে সূর্যাস্তের মাধ্যমে কালের অতলে হারিয়ে গেছে ২০২০ সাল। আবার এই করোনার মধ্যেই নতুন একটি বছরে পা রাখলো মানুষ। হিমেল বাতাসে, কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে সূর্য উদয়ের মধ্য দিয়ে এলো আরও একটি বছর। ঘরবন্দী আর নানা ঘটনাবহুল ২০২০-এর অনেক ঘটনার রেশ নিয়েই মানুষ এগিয়ে যাবে। অনেক ঘটনা তলিয়ে যাবে বিস্মৃতির অতল গহ্বরে। তমসা থেকে জ্যোতিতে উত্তীর্ণ হওয়ার আকাক্সক্ষা সমুখে নিয়ে সূচনা হলো এই যাত্রা। সারা বিশ্বের মানুষ গত রাত ১২টা বাজার সাথে সাথে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইংরেজি নববর্ষ ২০২১ কে স্বাগত জানায়।
নববর্ষ সকলের মাঝে জাগায় প্রাণের নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা। বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পেছনে ফেলে নতুন বছরের অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাওয়া। স্বভাবতই নতুন বছর নিয়ে এবার মানুষের প্রত্যাশা একটি করোনা মুক্ত বিশ্ব। তবে, করোনার টিকা ছাড়াও অর্থনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনাসহ মানবসম্পদ তৈরির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হচ্ছে আগামী বছরের মোটা দাগের চ্যালেঞ্জ। আর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে জাতি আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে, এটাই নতুন ইংরেজি বছরে সবার প্রত্যাশা।
সারা বিশ্বে ২০২০ সাল, বিষাদের বছর হিসেবে ইতিহাসে থেকে যাবে। অনেকেই মনে করেন, জীবন ও জীবিকার ওপর আঘাতের যে চিত্র বছরজুড়ে মানুষ দেখেছে, গত ১০০ বছরেও তা দেখা যায়নি। কোভিড-১৯-এর আগের বিশ্ব আর পরের বিশ্বের মধ্যে মিল কোন দিনই হবে না।
কোভিড-১৯ মহামারিতে লাখ লাখ মানুষ এরই মধ্যে মারা গেছেন। সেই সঙ্গে কয়েক কোটির বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং অর্থনৈতিক খাতে ১০ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। কোটি কোটি মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। ১০০ কোটির বেশি শিশু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে স্কুলে যেতে পারেনি।
২০২০ সাল বিপুল প্রাণসংহারের বছর হলেও এর বৈজ্ঞানিক অগ্রযাত্রা ও গতিও সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এ বছর কোভিড- ১৯এর কারণে বিশ্বে যে পরিমাণ বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি হয়েছে, অন্য কোনো রোগের ক্ষেত্রে এক বছরে মানুষ এতটা এগোতে পারেনি। সাধারণ সময়ে, একটি টিকা তৈরি করতে ১০ বছর পর্যন্ত সময় লেগে যায়। এবার এক বছরের কম সময়ে একাধিক করোনার টিকা তৈরি করা হয়ে গেছে এবং অনেক দেশেও প্রয়োগ শুরু হয়ে গেছে।
২০২১ সাল বাংলাদেশের জন্য স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। নতুন বছরের জন্য নতুন পরিকল্পনা সবারই। করোনায় গত বছর অনেকেই হারিয়েছে অনেক কিছু। অনেকে হারিয়েছেন স্বজন-প্রিয়জন। অর্থনৈতিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেকে। আবার কারো কারো প্রাপ্তিযোগও হয়েছে কোনো না কোনোভাবে।
সবচেয়ে প্রত্যাশার বিষয় হলো ইতিমধ্যেই করোনার টিকা আবিষ্কার হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলছে টিকা দেয়া। বাংলাদেশের সরকার জানুয়ারির মধ্যেই টিকা আনার ঘোষণা দিয়েছে। সবার প্রত্যাশা অল্প সময়ের মধ্যেই সবাই পেয়ে যাবে টিকা।