#দেশের খবর

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও এক শিক্ষার্থীর ওপর তাঁতীবাজার সংলগ্ন বংশাল এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সোমবার সন্ধ্যায় গুলিস্তানের লেগুনা স্ট্যান্ডের চালকেরা এই হামলা করেন। হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও এক শিক্ষার্থীসহ চারজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার রাত সাড়ে ১০টার ‍দিকে এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা গুলিস্তান লেগুনা স্ট্যান্ডের কিছু লেগুনা ভাঙচুর করেন। এর আগে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হামলার খবর পেয়ে পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এছাড়া বংশাল থানার সামনেও আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে তাঁতীবাজার মোড় হয়ে গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজার-বঙ্গবাজার-নাজিরা বাজার মোড় ঘুরে পুনরায় তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করেন। এ হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদশা ও রিফাত নামের দু’জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে।

এদিকে হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের গাড়ি চালক শ্যামল কুমার দাশসহ আরেক গাড়ি চালক তাজুল ইসলাম আহত হন। শিক্ষার্থীরা খবর পেয়ে আহত দুই গাড়ি চালক ও প্রক্টরকে মিডফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এর আগে দুপুরে মুন্না নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন গুলিস্তানের লেগুনা স্ট্যান্ডের চালকেরা। ওই শিক্ষার্থী ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এ ঘটনায় ১৪টি লেগুনা আটকে রাখে শিক্ষার্থীরা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, সোমবার সকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে গুলিস্তানের লেগুনা চালকেরা মারধর করেন। পরে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ লেগুনা স্ট্যান্ডে গেলে তাদের সঙ্গে চালকদের হাতাহাতি হয়।

সকালের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যায় প্রক্টরের ওপর হামলা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার পার হয়ে যাচ্ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের গাড়ি। এ সময় পার্শ্ববর্তী একটি অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে রিকশার ধাক্কা লাগে। ধাক্কা লাগার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলা চালায় স্থানীয়রা। কিছুক্ষণের মধ্যে গুলিস্তান থেকে ৬০-৭০ জন লোক চলে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের গাড়িতে হামলা করে। এ সময় হামলাকারীরা কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের লেগুনা সারাদিন আটকে রেখেছে, এমন স্লোগান দিতে দিতে হামলা করে।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক তাজাম্মুল হক বলেন, তাঁতীবাজার মোড়ে আমাদের সামনে একটি রিকশাকে ধাক্কা দেয় অ্যাম্বুলেন্স। তখনই পাশ থেকে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে স্থানীয়রা। ৫-৭ মিনিটের মধ্যে ওখানে শতাধিক লোক ছুটে আসে। প্রথমে আমার গাড়ির ড্রাইভারকে গাড়ি থেকে বের করে মারধর করে। আমি গাড়ি থেকে বের হলে আমার ওপরও হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা বলতে থাকে, জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের তো পেলাম না, শিক্ষকদের মেরে দিলাম।

এ ঘটনায় বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে লক্ষ্য করে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। তাঁতীবাজার এলাকায় প্রক্টরের গাড়ির সঙ্গে একটি রিকশার ধাক্কাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তৈরি হয়। এর জেরে এলাকাবাসীর সঙ্গে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এতে প্রক্টর সামান্য আহত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *