#সিলেট বিভাগ

সিলেটে করোনার ভুয়া সনদ: চিকিৎসক কারামুক্ত

বিদেশযাত্রীদের করোনাভাইরাসের ভুয়া সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগে গত ১৯ জুলাই সিলেটের এক চিকিৎসককে চার মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেছিলো ভ্রাম্যমাণ আদালত। নিজে করোনা আক্রান্ত হওয়ার তথ্য গোপন করে নিয়মিত চেম্বার করারও অভিযোগ ছিলো তার বিরুদ্ধে।

তবে সাজা প্রদানের ১০ দিনের মধ্যেই জামিনে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসেছেন ডা. এএইচএম শাহ আলম সাগর নামের ওই চিকিৎসক।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের ৪ মাসের কারাদণ্ড প্রদানের পর ১৯ জুলাই রাতেই ডা. সাগরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এরপর ২৮ জুলাই তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন।

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরের সাথে আলাপকালে ২৮ জুলাই কারামুক্ত হয়েছেন বলে জানান ডা. এএইচএম শাহ আলম সাগর।

কোন প্রক্রিয়ায় কারামুক্ত হয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমার আইনজীবী বলতে পারবেন। তিনি এখন ঈদের ছুটিতে আছেন।

সাগর বলেন, একটি ভুল বুঝাবুঝি থেকে আমাকে সাজা প্রদান করা হয়েছিলো। গ্রেপ্তার সময় আমি করোনা আক্রান্ত ছিলাম। কারামুক্ত হওয়ার পর আবার নমুনা জমা দিয়েছি। তবে এখনও রিপোর্ট পাইনি।

এখন নিজের বাসায় আইসোলেশনে আছেন বলে জানান ডা. সাগর।

করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া সনদ বাণিজ্য করা মোহাম্মদ সাহেদ ও ডা. সাবরিনা আরিফকে নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যেই সিলেটের এই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে করোনার ভুয়া সনদ প্রদানের অভিযোগ ওঠে।

ডা. এএইচএম শাহ আলম নগরীর মধুশহীদ এলাকার মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস লিমিটেডের নিচতলায় চেম্বারে রোগী দেখতেন।

১৯ জুলাই মেডিনোভায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা রায়ের নেতৃত্বে র‌্যাব-৯ এর একটি দল অভিযান চালিয়েছে ডা. এএইচএম শাহ আলমকে তার চেম্বার থেকে গ্রেপ্তার করে।

সেসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা রায় বলেছিলেন, বিদেশযাত্রীদের জন্য বিভিন্ন দেশ ও এয়ারলাইন্স করোনাভাইরাস নেগেটিভ সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করার পর প্রবাসীদের টার্গেট করেন তিনি। করোনা সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা বলে বিদেশযাত্রীদের কাছ থেকে তিনি চার হাজার টাকা করে আদায় করেন। ফ্লাইটের ৪৮ ঘণ্টা আগে রোগী বা যাত্রীকে না দেখেই তিনি তার প্যাডে প্রত্যয়নপত্রে লিখে দিতেন ওই ব্যক্তিকে তার চেম্বারে দেখেছেন। তার মধ্যে কোভিড-১৯ এর কোনো লক্ষণ নেই।

অভিযানকালে ডা. সাগর তার অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন জানিয়ে সেসময় ম্যাজিস্ট্রেট জানিয়েছিলেন, তাকে চার মাসের জেল এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

আর র‌্যাব-৯ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সামিউল আলম জানিয়েছিলেন, গত ১৪ জুলাই ডা. সাগর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েও তার চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখতেন। পাশাপাশি তিনি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার হিসেবে ভুয়া পদবী ব্যবহার করতেন।

এদিকে মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ও সাজাকে ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রে মিথ্যা অপবাদ নিয়ে আমাকে কয়েকদিন কারাভোগ করতে হয়েছে।’

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *