খাল দখল করে লেক নির্মাণ
ঢাকা ওয়াসার প্রবহমান তিনটি খাল দখল করে লেকে পরিণত করায় রাজধানীর পানি প্রবাহ ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। খালগুলোর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা মহানগরীর উত্তরে বিস্তৃত এলাকায় জলাবদ্ধতা স্থায়ী রূপ নিতে পারে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) উত্তরা আবাসিক প্রকল্পের (তৃতীয় পর্যায়) অধীনে সৌন্দর্যবর্ধনের লক্ষ্যে লেক নির্মাণের কাজ করছে। অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা ওয়াসা বা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির বিরোধিতা সত্ত্বেও খালকে লেকে রূপান্তর করার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে রাজউক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী এএসএম রায়হানুল ফেরদৌস সমকালকে বলেন, ‘উত্তরা তৃতীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ঢাকা ওয়াসার কয়েকটি খালের স্থান পরিবর্তন করে আবার খাল কেটে দেওয়া হয়েছে। সব পানি নিস্কাশন চ্যানেল ঠিক রাখা হয়েছে। ফলে পানি প্রবাহ বন্ধ হওয়ার কথা না।’
কিন্তু সরেজমিন ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। মহানগরীর আব্দুল্লাহপুর, বাউনিয়া ও দ্বিগুণ খালের প্রায় সাত কিলোমিটার অংশ দখল করে ‘দৃষ্টিনন্দন’ এই লেক নির্মাণ করছে রাজউক। এতে এলাকার সৌন্দর্য বাড়লেও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিস্তীর্ণ এলাকায় তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি জমে যায় উত্তরা, রানাভোলা, পাকুরিয়া, উলুদাহ, তাফালিয়া, দিয়াবাড়িসহ আশপাশের এলাকায়। বিদ্যমান সমস্যার সমাধানে ঢাকা ওয়াসা সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে চিঠি চালাচালি করলেও সমাধান মেলেনি।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা ওয়াসার পরিচালক এ কে এম সহিদ উদ্দিন সমকালকে বলেন, ‘খাল দখল করে লেকে রূপান্তরের কার্যক্রম বন্ধ করতে দফায় দফায় চিঠি দিলেও রাজউক কর্ণপাত করছে না। খালগুলো লেকে পরিণত করায় ওই এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। মানুষ স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছে না। সমকালের এ প্রতিবেদক এলাকা ঘুরে দেখেছেন, খালকে লেকে রূপান্তর করে দুই পাড় ভালোভাবে বাঁধাই করা হয়েছে। কোথাও কোথাও বাঁধও দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো লেকে নামানো হয়েছে ওয়াটার বোটও। ওইসব বোটে চড়ে শহরের বাসিন্দারা আনন্দঘন সময় কাটাচ্ছেন। উপভোগ করছেন কৃত্রিম লেকের সৌন্দর্য। কিন্তু লেকের অনতিদূরেই বহু স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা গেছে। এলাকাবাসী বিরক্ত।





