মোদির সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে পাকিস্তানের পাল্টা আঘাতে বিপাকে ভারত।

ভারতের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানে নাটকীয় মোড় নিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশনায় চালানো সর্বশেষ সার্জিক্যাল স্ট্রাইকটি যে কেবল প্রত্যাশিত ফল আনতে ব্যর্থ হয়েছে তাই নয়, বরং তা উল্টো আত্মঘাতী সিদ্ধান্তে পরিণত হয়েছে বলে বিশ্লেষকদের মত।
পূর্বের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকগুলোর পর পাকিস্তান প্রায় নিঃশব্দ থাকলেও, এবার তারা ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। ভারতীয় হামলার মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই পাকিস্তান এয়ারফোর্স সীমান্তবর্তী একটি ব্রিগেড কমান্ডে পাল্টা হামলা চালায়, যাতে ২২ জন ভারতীয় সেনা সদস্য নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ধ্বংস হয়েছে বেশ কয়েকটি সামরিক হেলিকপ্টার ও একটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান।
এরকম পরিস্থিতিতে অতীতে যেভাবে মোদি ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা বিজয়োল্লাসে সংবাদমাধ্যমে মুখর ছিলেন, এবারে তাদের মুখে স্পষ্টভাবে নীরবতা ও উদ্বেগ লক্ষ্য করা গেছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র সচিবের সংবাদ সম্মেলন বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়—চলতি অভিযানের হিসেব মেলেনি। পাকিস্তানের পাথরের জবাব যে এইবার ইট নয়, বরং পুরো পাহাড় হয়ে ধেয়ে আসবে—তা মোদি সরকার অনুমান করতে পারেনি।
ভারতের নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন, মোদির আশেপাশের কিছু অতি উৎসাহী কর্মকর্তার তাড়াহুড়োর পরামর্শে এই অভিযানে অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু ভারতীয় সেনাবাহিনীর একাধিক জেনারেলই এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ছিলেন। তারা বিশ্বাস করতেন, একাধিকবার কারো ভূখণ্ডে প্রবেশ করে হামলা চালালে প্রতিপক্ষ একসময় চুপ করে বসে থাকবে না।
এই অঞ্চলে যুদ্ধ কোনো দেশকেই শান্তি এনে দেয় না। ভারত-পাকিস্তান দুই দেশই পারমাণবিক শক্তিধর, এবং এদের মধ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশ, নেপাল, আফগানিস্তানসহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশও রেহাই পাবে না। পারমাণবিক যুদ্ধের প্রভাব সীমান্ত পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ে অনেক দূর পর্যন্ত।
ভারত সামরিক শক্তিতে পাকিস্তানের চেয়ে প্রায় চার গুণ এগিয়ে, তবে পুরো শক্তি কোনো একক ফ্রন্টে নামানোর ক্ষমতা ভারতীয়দের নেই। চীন ও বাংলাদেশ সীমান্তে সেনা মোতায়েন রেখে পাকিস্তানের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে যাওয়া কৌশলগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণেই উচ্চপর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তারা এই স্ট্রাইকের বিরোধিতা করেছিলেন।
অদ্ভুত এক তথ্য বলছে—কাশ্মীরসহ ভারতের ভেতরে যত বড় ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা বা গণহত্যা ঘটেছে, তার অধিকাংশ সময়ই বিজেপি সরকার ক্ষমতায় ছিল। মোদি শাসনে ‘ক্ষমতায়নের’ সংজ্ঞাই যেন পাল্টে গেছে। হিন্দুত্ববাদকে হাতিয়ার করে একাধিকবার জয় পেলেও এবারে মোদি জানেন—এই কৌশল আর কাজ নাও করতে পারে। তাই শেষ চেষ্টা হিসেবে রাষ্ট্রীয়তাবাদ উস্কে দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার প্রয়াস চালানো হচ্ছে বলে মত অনেক বিশ্লেষকের।
শেষ কথা—যুদ্ধ কখনো টেকসই শান্তির পথ হতে পারে না। মোদি সরকারের এই পদক্ষেপ আদৌ কৌশলগত সাফল্য না ব্যর্থতা, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এখনই বলা যায়—এই হিসেবের গড়মিল ভারতকে বড় মূল্য দিতে হতে পারে।
আপনি চাইলে এই প্রতিবেদনটিকে আরো সংক্ষিপ্ত বা ভিজ্যুয়াল ফরম্যাটে তৈরি করে দিতে পারি—আপনার কী পছন্দ?