#পাঠক সমাচার

বিমানের ম্যানচেস্টার-সিলেট-ঢাকা ফ্লাইট বন্ধের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব এবং যাত্রীদের দুর্ভোগ

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ম্যানচেস্টার-সিলেট-ঢাকা রুটে সরাসরি ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণা অনেক বাংলাদেশি প্রবাসীর জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউকে এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি যাত্রীদের জন্য এটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ মাধ্যম। এই রুটটি বন্ধ হলে যাত্রীরা এখন বিকল্প পথে ভ্রমণের জন্য বাধ্য হবেন , যা সময়, অর্থ এবং মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেবে।

বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য এই রুটের গুরুত্ব অপরিসীম ও তাৎপর্যপূর্ণ। ম্যানচেস্টার-সিলেট-ঢাকা রুটটি বিশেষ করে ৯০ ভাগ সিলেটী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলের প্রবাসীদের জন্য কতোটা গুরুত্বপূর্ণ তা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। সিলেটি প্রবাসীদের বিশাল একটি অংশ ম্যানচেস্টার তথা নর্থ ওয়েস্টে বাস করেন এবং তাদের জন্য সরাসরি ফ্লাইট ছিল সময় সাশ্রয়ী ও সুবিধাজনক। তাছাড়া, এই ফ্লাইটের মাধ্যমে তারা সরাসরি তাদের নিজ এলাকায় পৌঁছানোর সুযোগ পেতেন। এই রুটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন তাদের লন্ডন বা অন্য শহরের মাধ্যমে ভ্রমণ করতে হবে, যা সময় ও খরচ উভয়ই বৃদ্ধি করবে। একই সাথে পাশের শহর শেফিল্ড, নটিংহাম, নর্থ ওয়েলস, বার্মিংহাম সহ অনেক এলাকার বাঙালীরা ও ব্যাপক সমস্যায় পড়বেন।

এরই মধ্যে স্থানীয় বাংলাদেশিদের মধ্যে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্যাপক মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন সংগঠন ও নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদ কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার ও বিমান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝাড়ছেন। বিভিন্ন সংগঠন ও পার্শবর্তী শহরের বাংলাদেশী কমিউনিটিদেড় কে নিয়ে বৃহৎ প্রতিবাদ কর্মসূচির ও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এই রুট বন্ধ করার কারণ হিসেবে লাভজনকতা ও পরিচালন খরচের কথা উল্লেখ করেছে। তবে অনেক যাত্রী মনে করেন, সঠিক পরিকল্পনার অভাব এবং বাজার গবেষণার ঘাটতির কারণে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রবাসী যাত্রীদের চাপ ও চাহিদা সত্ত্বেও, এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ একটি রুট বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত  হতাশাজনক।

প্রভাব ও দুর্ভোগ

১. বিকল্প রুটের সমস্যা: সরাসরি ফ্লাইটের অভাবে যাত্রীদের লন্ডন বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে ভ্রমণ করতে হবে। এতে যাত্রার সময় বৃদ্ধি পাবে এবং যাত্রীরা দীর্ঘ ভ্রমণে ক্লান্ত হয়ে পড়বেন।

২. খরচ বৃদ্ধি: বিকল্প রুট ব্যবহারে যাত্রীদের খরচ বাড়তে পারে। তাছাড়া, স্থানান্তরের সময় অতিরিক্ত খরচের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

৩. মানসিক চাপ: দীর্ঘ ভ্রমণ ও স্থানান্তর জনিত ঝামেলা যাত্রীদের মানসিক চাপ বাড়াবে। বিশেষ করে বয়স্ক যাত্রী এবং শিশুদের জন্য এটি বিশেষ সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

সমাধানের জন্য প্রস্তাবনা

১. সঠিক বাজার গবেষণা: বিমানের উচিত প্রবাসীদের চাহিদা অনুযায়ী নতুন করে বাজার গবেষণা করা এবং রুটটির সম্ভাব্যতা পর্যালোচনা করা।

২. বিকল্প সমাধান: যদি সরাসরি ফ্লাইট চালু রাখা সম্ভব না হয়, তবে ম্যানচেস্টার থেকে সিলেট পর্যন্ত বিদেশী এয়ারলাইন্স কোম্পানি গুলোকে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি ও সুযোগ সুবিধা দেওয়া হোক।

৩. প্রবাসীদের মতামত নেওয়া: এই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে প্রবাসী যাত্রীদের মতামত এবং চাহিদা বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরি।

শেষ কথা

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ম্যানচেস্টার-সিলেট-ঢাকা ফ্লাইট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য একটি বড় ধাক্কা। এটি শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং সামাজিকভাবেও প্রবাসীদের জীবনে প্রভাব ফেলবে। আশা করি, কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করবে এবং যাত্রীদের সুবিধার জন্য আরও কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *