‘নিগূঢ় আগন্তুক’ – সৈয়দ মিনহাজুল ইসলাম (শিমুল) ।

মূল গল্প : Mysterious Stranger.
লেখক : Annie McMahon.
তাকে দেখে সাধারণ পরিভ্রাজকের মতই লাগছিল। গলায় ক্যামেরা ঝুলানো, ব্যাগের ভিতর থেকে সানস্ক্রিনটা উঁকি দিচ্ছে।
স্থূলকায় মানুষটি টেরেসে বসে লেবুর শরবতে চুমুক দিল । নৌভ্রমনের চকচকে বিজ্ঞাপনের পাতায় চোখ গেড়ে বসে আছে লোকটি। কিন্তু মনে হচ্ছিল তা শুধু অভিনয়। তার চোখদুটি কালো চশমায় ঢাকা। আমি নিশ্চিত, সে শুধুই তাকিয়ে আছে, কারণ গত দশ মিনিট ধরে সে একই পাতায় আটকে আছে। পাতা উল্টোতে আমি তাকে দেখিনি এখনো।
আমি যখন তার স্যুপ টেবিলে পরিবেশন করতে গেলাম, সে খুক করে একবার কেশে উঠলো। আর চোঁখে আমার দিকে একবার তাকিয়ে ধন্যবাদ জানালো। তার বা কনুইতে আড়াআড়ি ছোট্ট কাটা দাগটিতে আমার চোঁখ আটকে গেলেও, আমি দ্রুত দৃষ্টি সরিয়ে নিলাম।
কালক্ষেপন না করে আমি খালি ট্রে টা নিয়ে ভিতরে চলে গেলাম। লোকটির চেহারা খুব পরিচিত মনে হচ্ছিল। কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছিলাম না কোথায় দেখেছি ?
অকস্মাৎ আমার স্মৃতিতে ধরা পড়লো। সেই গাড়ি দুর্ঘটনা ! এই সেই ব্যক্তি, যে কিনা আমাকে গাড়ি থেকে টেনে বের করেছিল বিস্ফোরণের পূর্বে। আমি দ্রুত সেই টেবিলে ফিরে গেলাম।
সে ততক্ষনে চলে গেছে। আমি তার ব্যবহৃত থালা-বাটি সরাতে গিয়ে নিচে চাপা দেয়া কিছু বকশিস পেলাম এবং সাথে একটি কার্ড, যাতে লেখা ছিল –
“আমি তোমার কাছে ঋনি। যে রাতে তোমার গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়েছিল, সেই রাতে আমি একটি গহনার দোকান ডাকাতি করতে যাচ্ছিলাম। তোমার জীবন বাঁচাতে গিয়ে আমার মধ্যে এক গূঢ় উপলব্ধির জন্ম নেয়। আমি নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করি। এখন আমি সৎ পথে নিজেকে পরিচালিত করছি। আর এই সবই সম্ভব হয়েছে তোমার জন্যে। অশেষ ধন্যবাদ। ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুন।”
মিঃ ডি।