‘লেখক বন্ধুরা’ – লুনা রাহনুমা।

গিয়েছিলাম বার্মিংহাম তানজিনার বাড়ি,
গিয়ে দেখি বাড়ি ভর্তি লোকের ছড়াছড়ি।
পা বাড়িয়ে ভড়কে বলি, ভুল ঠিকানায় এলাম?
মেসেঞ্জারে তার পাঠানো ঠিকানা দেখালাম।
এত্তো মিঠা হাসি দিয়ে জড়িয়ে ধরলো আমায়,
“ভুল কিছু না, ভুল কিছু না, আছি সবার আশায়।”
রাস্তায় দেখা সিমির সাথে, গাড়ির পাশে শাড়ি,
লাল শাড়িতে বিকশিত সিমির দাঁত ও মাড়ি।
সাদা প্যাকেট খুলে সিমি ধরায় বুকে জ্বালা,
সুবাসিত বেলি ফুলের ডজন খানেক মালা!
প্লাস্টিক ও না, কাগজ ও না, নয় কাপড়ে বোনা,
সত্যিকারের ফুলের মালা, বিশ্বাস করা যায় না।
ও তানজিনা, তোমার বাড়ি, তোমার মুখের নরম হাসি,
গালে একটা চিমটি কাটি, আসলেই কি তুমি নাকি?
বাগানখানি ফুলে ফলে আলোয় আলোয় ভরা,
শেডের নিচে মুচকি হাসে গোলাপি রঙের ছোড়া!
লাজুক হাসি আর দেখি নাই, মুখটি তবু চেনা,
দাঁড়িয়ে গেলাম, ভাইসাব না, শিমুল নামে জানা?
একলা দাওয়াত খেতে এসে পড়েছে মাইনকা চিপায়,
শিমুল ভাইয়ের তাই নিয়ে যে লজ্জার সীমা নাই।
দূরের দেশের বন্ধু মোদের রেজিনা এসেছে কাছে,
তার উছিলায় বাদ বাকিরা পোজ মেরেছি ডাঁটে।
লালে লালে রঙিন সবাই, রাঙা গোলাপ কলি,
তবুও সবাই আমায় বলে, বর্ণ কানা নাকি?
আমার গায়ের লাল শাড়িটি পেকে গেছে বেশি,
লালের চেয়ে খয়েরি নামেই রংটি লাগে দেশি!
সুভাষিণী তাবাস্সুমের হাতে চিকন আঙ্গুল,
এই আঙুলেই গল্প লিখে পাঠক করে ব্যাকুল।
সবার শেষে হাজির হলো, ইফতেখার ভাই,
তাৎক্ষণিকের পুঁথি পাঠে যার জুড়িটি নাই।
ছানা পোনার খোঁজ করি না, কোথায় আছে কেমন,
প্রতি সেকেন্ড হাহা হিহি চলছে সবার ভীষণ।
বাড়ির ভেতর চুলায় উপর হচ্ছে কাবাব ভাজা,
গ্যাসের চুলায় বাগান ঘরে কাচ্চি দমে ঠাসা।
শফিক ভাই আর রফিক ভাই করছেন তদারকি,
আমাদের আর কাজ কী? তাই আমরা ছবি তুলি।
সবার প্রিয় ওসামা ভাই ছবির মতোই মানুষ,
আড্ডাবাজির মধ্যমনি, উড়ান গল্পের ফানুস।
ডুপন সাহেব শুধু ভাবে আরেকটু হোক ফান,
সজল ভাইয়ের শান্ত স্বভাব বদলে মিশে যান।
আনন্দের এই দিনটি তবু খালি খালি ছিল,
সে আসেনি, তার কথাটি মনের ভেতর ছিল।
শারমিনটা আসলো না যে, মেঘলা আসতে পারতো!
নাদিয়া বীথি এই সময়ে বাড়িটা কেন বদলালো?
আরো আছে বন্ধু ক`জন, লেখালেখি করে,
সবার জন্য ভালোবাসায় বুকটা খাঁ খাঁ করে।
হেসে খেলে গড়াগড়ি সময় বয়ে গেলো,
তানজিনাকে বিদায় দেয়ার প্রহর চলে এলো।
সারাটি দিনের হুটোপুটি, কথার ঝুলি মেলে,
তবুও যেন মন ভরেনি এতো এতোও বলে।
যাবার আগেই পরের দেখার তারিখ বলে যাই,
শেষের দেখা এ যেন নয়, আবার আড্ডা চাই।
চলছে চলুক আড্ডাবাজি, দেখা-সাক্ষাৎ, লেখালেখি-
“লেখক বন্ধু” নামে ভারী, জীবনটাকে সহজ রাখি।