#ইসলাম ও জীবন দর্শন

পিতা মাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য।

আমাদের জন্মদাতা মা-বাবা। এ পৃথিবীতে তাদের মতো আপনজন আর কেউ নেই। তারা আমাদের জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত। প্রিয় নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত। আর সে বেহেশত অর্জন করার পূর্বশর্ত হচ্ছে তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা, নরম ভাষায় কথা বলা, সম্মানের চোখে দেখা। পিতা-মাতা সব সময় সন্তানের কল্যাণের কথা ভাবেন। তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে কোনো সন্তান কখনও সফলতার পথে এগিয়ে যেতে পারে না। মা-বাবার অবাধ্য সন্তানের ধ্বংস অনিবার্য।

আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন, তাকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত কর না এবং পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উহ্’ শব্দটিও বল না, তাদেরকে ধমক দিও না এবং তাদের সঙ্গে শিষ্টাচারপূর্ণ কথা বল। তাদের সামনে ভালোবাসার সঙ্গে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বল- হে প্রভু, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৩ ও ২৪)।

মা-বাবার সঙ্গে উত্তম আচরণ করলে মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের দুনিয়া এবং আখেরাতের কল্যাণ দান করবেন। কোরআন ও হাদিসের আলোকে মা-বাবার প্রতি সন্তানের অত্যাবশ্যকীয় দায়িত্ব ও কর্তব্যগুলো হল- ১. পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা এবং তাদের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন করা। ২. সুন্দর ও মার্জিত ভাষায় কথা বলা। ৩. তাদের সুখ-শান্তির জন্য আমাদের ধনসম্পদ ব্যয় করা। ৪. তাদের সঙ্গে বিনম্রভাবে চলাফেরা করা। ৬. যে কোনো বিষয়ে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করা। ৭. তাদের সঙ্গে কর্কশ ও বিশ্রী বাক্যে কথা না বলা। ৮. পিতা-মাতার মৃত্যুর পর তাদের জন্য আল্লাহতায়ার কাছে মাগফিরাতের দোয়া করা। তাদের ঋণ পরিশোধ করা। তাদের ওসিয়তগুলো পূর্ণ করা।

সর্বোপরি বলতে পারি, সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে পূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হওয়া পর্যন্ত মা-বাবা সন্তানের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে থাকেন। সন্তানের জন্য এত ভালোবাসার আর কেউ নেই। কিন্তু অতি দুঃখের সঙ্গে আজকাল দেখা যায়, পিতা-মাতা বার্ধক্যে উপনীত হলে অনেকে তাদের বৃদ্ধাশ্রম নামক কারাগারে পাঠিয়ে দেন। যা একজন সন্তানের কাছ থেকে কোনোভাবেই কাম্য নয়। এতে আল্লাহর আরশ কেঁপে ওঠে। জমিন অভিশাপ করে। তাই আসুন! মা-বাবা দু’জন বা কোনো একজন বেঁচে থাকলেও তাদের সেবা-যত্ন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত অর্জন করি।

লেখক : মুফতি আব্দুল হাশিম।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *